শিশুকে শৃঙ্খলা শেখাবেন যেভাবে
শিশুরা সবসময় মা-বাবাকে অনুসরণ করে। তাই সন্তানের জন্য যা নিয়ম করবেন, আপনি নিজেও তা মেনে চলুন।
আপনি যদি সময়ে-অসময়ে টিভি চালিয়ে রাখেন কিংবা ফোনে গল্প করতে থাকেন বা ইন্টারনেট চালান, তা হলে আপনার সন্তানও নিয়ম মেনে কিছুই করবে না। সময়ের কাজ সময়ে করুন, সন্তান আপনাকে দেখেই শিখবে।
অনেক ক্ষেত্রেই এমন হয় যে বাচ্চাকে বকাবকি নিয়ে ঝগড়া বেঁধে গেল মা-বাবার মধ্যেই। এটা কিন্তু খুবই খারাপ প্রবণতা। সন্তানকে শাসন করার সময় মা-বাবা একটা ইউনিট হিসেবে কাজ করুন। একজন বকলেন, অন্যজন কোলে নিয়ে আদর করে দিলেন, এমনটায় কোনও কাজই হয় না। শিশুকে বোঝান, ভুল করলে রাগ করবে মা-বাবা দু’জনই!
আপনার বাচ্চাটি যত ছোটই হোক না কেন, ওকে সম্মান করুন। ওর মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করুন। মতামত না মানার মতো হলে বুঝিয়ে বলুন, কেন সেটা শুনছেন না আপনারা।
সন্তানকে শাসন করার সময় কখনও কোনও খারাপ কথার প্রয়োগ করবেন না। নিজেরাও ঝগড়ার সময় কোনও খারাপ কথা মুখে আনবেন না। মাথায় রাখবেন, আপনি যা বলছেন, তাই শিখবে আপনার শিশু!
অন্য কারও সাথে কখনও নিজের সন্তানের তুলনা করবেন না। সবার সামনে ওর সমালোচনাও করবেন না। এতে আত্মবিশ্বাস ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। অনেক ক্ষেত্রেই শিশু মা-বাবার প্রতি আস্থাও হারাতে শুরু করে। তখন সামাজিক বোধের বিকাশ ঘটা তো দূর, আরও বেশি আত্মকেন্দ্রিক হয়ে ওঠে ও।
শৃঙ্খলাবোধ কখনও চাপিয়ে দেওয়া যায় না। প্রত্যেক শিশুর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আলাদা। ওর মন বুঝে তবেই দিনের রুটিন তৈরি করুন। আপনার শিশু কীভাবে সময় কাটাতে ভালোবাসে, কোন সময় পড়তে স্বচ্ছন্দ বোধ করে, এগুলো মাথায় রেখে তবেই রুটিন বেঁধে দিন।
কোনও কিছু অপছন্দ হলে সপাটে চড় বসিয়ে দেয়ার প্রবণতা কিন্তু কমাতেই হবে আপনাকে। জানবেন, মারধরে কোনও কাজই হয় না। বাচ্চার কোনও আচরণে আপত্তি হলে বুঝিয়ে বলুন, দেখুন ঠিক কাজ হবে। ওকে ক্ষমা চাইতে দিন!
যত ব্যস্ততাই থাক না কেন, সন্তানকে যথেষ্ট সময় দিন। পরিবারের সবাই দিনের একটা সময় অন্তত একসঙ্গে কাটান। আপনারা নিজেদের ছোটবেলার গল্পো শোনান ওকে। মনে রাখবেন, বেড়ে ওঠার দিনগুলোয় আপনার বাচ্চা একটু-আধটু দুষ্টুমি করবেই। ওর উপর শৃঙ্খলার ভার চাপাতে গিয়ে যেন কোনও ভুল না হয়ে যায়! এতে আপনার শিশুরই বিকাশ ব্যাহত হবে।
সূত্র কার্টেসি: বেবিস্টেশন