সূরা আল-বাকারা

সূরা আল-বাকারা

সূরা আল-বাকারা- অর্থসমূহের অনুবাদ (আয়াত ১০১ থেকে ১৫০)

(২:১০১) আর যখন আল্লাহ্র পক্ষ থেকে তাদের নিকট একজন রাসূল আসলেন, তাদের কাছে যা রয়েছে তার সত্যায়নকারী হিসেবে,  তখন যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিলো তাদের একদল আল্লাহ্র কিতাবকে পিছনে ছুঁড়ে ফেললো, যেন তারা জানেই না।

(২:১০২) আর সুলাইমানের রাজত্বে শয়তানরা যা আবৃত্তি করতো তারা তা অনুসরণ করেছে। আর সুলাইমান কুফরী করেননি বরং শয়তানরাই কুফরী করেছিল।  তারা মানুষকে শিক্ষা দিত যাদু ও (সে বিষয় শিক্ষা দিত) যা বাবিল শহরে হারূত ও মারূত ফিরিশতাদ্বয়ের উপর নাযিল হয়েছিলো। তারা উভয়েই এই কথা না বলে কাউকে শিক্ষা দিত না যে, আমরা নিছক একটি পরীক্ষা, কাজেই তুমি কুফরী করো না,  তা সত্বেও তারা ফিরিশতাদ্বয়ের কাছ থেকে এমন যাদু শিখতো যা দ্বারা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাতো।  অথচ তারা আল্লাহ্র অনুমতি ব্যাতীত তা দ্বারা কারো ক্ষতি করতে পারতো না। আর তারা তাই শিখতো যা তাদের ক্ষতি করতো এবং কোনো উপকারে আসত না আর তারা নিশ্চিত জানে যে, যে কেউ তা খরিদ করে, (অর্থাৎ যাদুর আশ্রয় নেয়) তার জন্য আখেরাতে কোনো অংশ নেই।  যার বিনিময়ে তারা নিজেদের বিকিয়ে দিচ্ছে, তা খুবই মন্দ, যদি তারা জানতো।

(২:১০৩)আর যদি তারা ঈমান আনত ও তাকওয়া অবলম্বন করত, তবে আল্লাহ্র কাছ থেকে প্রাপ্ত সওয়াব নিশ্চিতভাবে (তাদের জন্য) অধিক কল্যাণকর হত, যদি তারা জানত!

(২:১০৪) হে মুমিনগণ! তোমরা রা-এনা বলো না, বরং উনযুরনা বলো এবং শোন। আর কাফিরদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে।

(২:১০৫) কিতাবীদের মধ্যে যারা কুফরী করেছে তারা এবং মুশরিকরা এটা চায় না যে, তোমাদের রবের কাছ থেকে তোমাদের উপর কোনো কল্যাণ নাযিল হোক। অথচ আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছে নিজ রহমত দ্বারা বিশেষিত করেন। আর আল্লাহ্ মহা অনুগ্রহশীল।

(২:১০৬)আমি কোনো আয়াত রহিত করলে বা ভুলিয়ে দিলে তা থেকে উত্তম অথবা তার সমান কোনো আয়াত এনে দেই আপনি কি জানেন না যে, আল্লাহ্ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।

(২:১০৭)আপনি কি জানেন না যে, আসমান ও যমীনের সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লাহ্র? আর আল্লাহ্ ছাড়া তোমাদের কোনো অভিভাবকও নেই, নেই সাহায্যকারীও।

(২:১০৮)তোমরা কি তোমাদের রাসূলকে সেরূপ প্রশ্ন করতে চাও যেরূপ প্রশ্ন পূর্বে মূসাকে করা হয়েছিল ? আর যে ঈমানকে কুফরে পরিবর্তন করবে, সে অবশ্যই সরল পথ হারাল।

(২:১০৯) কিতাবীদের অনেকেই চায়, যদি তারা তোমাদেরকে ঈমান আনার পর কাফিররূপে ফিরিয়ে নিতে পারত! সত্য স্পষ্ট হওয়ার পরও তাদের নিজেদের পক্ষ থেকে বিদ্বেষবশতঃ (তারা এটা করে থাকে)অতএব,তোমরা ক্ষমা কর এবং উপেক্ষা কর যতক্ষণ না আল্লাহ্ তার কোনো নির্দেশ দেন-নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।

(২:১১০)তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠা কর,যাকাত দাও,তোমরা উত্তম কাজের যা কিছু নিজেদের জন্য পেশ করবে আল্লাহ্র কাছে তা পাবে। নিশ্চয় তোমরা যা করছ আল্লাহ্ তার সম্যক দ্রষ্টা।

(২:১১১)আর তারা বলে,ইয়াহুদী অথবা নাসারা ছাড়া অন্য কেউ কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না, এটা তাদের মিথ্যা আশা। বলুন,যদি তোমরা সত্যবাদী হও তবে তোমাদের প্রমাণ পেশ কর

(২:১১২)যে কেউ আল্লাহ্র কাছে সম্পূর্ণরূপে আত্মসমর্পণ করে এবং সৎকর্মশীল হয়,তার প্রতিদান তার রবের কাছে রয়েছে। আর তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না

(২:১১৩)ইয়াহুদীরা বলে,নাসারাদের কোনো ভিত্তি নেই এবং নাসারারা বলে,ইয়াহূদীদের কোনো ভিত্তি নেই, অথচ তারা কিতাব পড়ে। এভাবে যারা কিছুই জানেনা তারাও একই কথা বলে  কাজেই যে বিষয়ে তারা মতভেদ করতো কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাদের মধ্যে (সে বিষয়ে) মীমাংসা করবেন।

(২:১১৪) আর তার চেয়ে অধিক যালিম আর কে হতে পারে, যে আল্লাহ্র মসজিদগুলোতে তাঁর নাম স্মরণ করতে বাঁধা দেয় এবং এগুলো বিরাণ করার চেষ্টা করে?  অথচ ভীত-সন্ত্রস্ত না হয়ে তাদের জন্য সেগুলোতে প্রবেশ করা সঙ্গত ছিল না। দুনিয়াতে তাদের জন্য লাঞ্ছনা ও আখেরাতে রয়েছে মহাশাস্তি

(২:১১৫) আর পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহ্রই সুতরাং যেদিকেই তোমরা মুখ ফিরাও না কেন, সেদিক আল্লাহ্র দিক। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ

(২:১১৬)আর তারা বলে,আল্লাহ্ সন্তান গ্রহন করেছেন, তিনি (তা থেকে) অতি পবিত্র বরং আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে সবই আল্লাহ্র। সবকিছু তাঁরই একান্ত অনুগত

(২:১১৭) তিনি আসমানসমূহ ও যমীনের উদ্ভাবক। আর যখন তিনি কোনো কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন, তখন তার জন্য শুধু বলেন, 'হও', ফলে তা হয়ে যায়

(২:১১৮)আর যারা কিছু জানে না তারা বলে,আল্লাহ্ আমাদের সাথে কথা বলে না কেন?অথবা আমাদের কাছে কেন আসে না কোনো আয়াত,এভাবে তাদের পূর্ববতীরাও তাদের মত কথা বলতো। তাদের অন্তর একই রকম। অবশ্যই আমরা আয়াতসমূহকে স্পষ্টভাবে বিবৃত করেছি, এমন কওমের জন্য, যারা দৃঢ়বিশ্বাস রাখে।

(২:১১৯)নিশ্চয় আমরা আপনাকে পাঠিয়েছি সত্যসহ সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে আর জাহান্নামীদের সম্পর্কে আপনাকে কোনো প্রশ্ন করা হবে না।

(২:১২০)আর ইয়াহুদী ও নাসারারা আপনার প্রতি কখনো সন্তুষ্ট হবে না,যতক্ষণ না আপনি তাদের মিল্লাতের অনুসরণ করেন।বলুন নিশ্চয় আল্লাহ্র হিদায়াতই প্রকৃত হিদায়াত। আর আপনার কাছে জ্ঞান আসার পরও যদি আপনি তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করেন,তবে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে আপনার কোনো অভিভাবক থাকবে না এবং থাকবে না কোনো সাহায্যকারীও

(২:১২১)যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি, তাদের মধ্যে যারা যথাযথভাবে তা তিলাওয়াত করে, তারা তাতে ঈমান আনে। আর যারা তার সাথে কুফরী করে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।

(২:১২২)হে ইসরাঈল-বংশধররা!আমার সে নিয়ামতের কথা স্মরণ কর,যা আমি তোমাদেরকে দিয়েছি।আর নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি (তৎকালীন) সৃষ্টিকুলের সবার উপর।

(২:১২৩) আর তোমরা সেদিনের তাকওয়া অবলম্বন কর যেদিন কোনো সত্তা অপর কোনো সত্তার কোনো কাজে আসবে না। কারো কাছ থেকে কোনো বিনিময় গ্রহণ করা হবে না  এবং কোনো সুপারিশ কারো পক্ষে লাভজনক হবে না। আর তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না।

(২:১২৪) আর স্মরণ করুন, যখন ইবরাহীমকে তাঁর রব কয়েকটি কথা দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, অতঃপর তিনি সেগুলো পূর্ণ করেছিলেন। আল্লাহ্ বললেন,নিশ্চয় আমি আপনাকে মানুষের ইমাম বানাবো, তিনি বললেন, আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও (আল্লাহ্) বললেন, আমার প্রতিশ্রুতি যালিমদেরকে পাবে না

(২:১২৫) আর স্মরণ করুন, যখন আমরা কাবা ঘরকে মানবজাতির মিলনকেন্দ্র ও নিরাপত্তাস্থল করেছিলাম এবং বলেছিলাম,তোমরা মাকামে ইবরাহীমকে সালাতের স্থান রূপে গ্রহণ করো।  আর ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে আদেশ দিয়েছিলাম তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী, রুকূ ও সিজদাকারীদের জন্য  আমার ঘরকে পবিত্র রাখতে।

(২:১২৬) আর স্মরণ করুন, যখন ইবরাহীম বলেছিলেন, হে আমার রব ! এটাকে নিরাপদ শহর করুন এবং এর অধিবাসীদের মধ্যে যারা আল্লাহ্ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান আনে। তাদেরকে ফলমূল হতে জীবিকা প্রদান করুন। তিনি (আল্লাহ্) বললেন, যে কুফরী করবে তাকেও কিছু কালের জন্য জীবনোপভোগ করতে দিব, তারপর তাকে আগুনের শাস্তি ভোগ করতে বাধ্য করব। আর তা কত নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল !

(২:১২৭) আর স্মরণ করুন, যখন ইবরাহীম ও ইসমাঈল কাবাঘরের ভিত্তি স্থাপন করছিলেন,বলছিলেন,হে আমাদের রব!আমাদের পক্ষ থেকে কবুল করুন।নিশ্চয় আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ ।

(২:১২৮) হে আমাদের রব ! আর আমাদের উভয়কে আপনার একান্ত অনুগত করুন এবং আমাদের বংশধর হতে আপনার এক অনুগত জাতি উত্থিত করুন। আর আমাদেরকে ইবাদাতের নিয়ম-পদ্ধতি দেখিয়ে দিন এবং আমদের তাওবা কবুল করুন। নিশ্চয় আপনিই বেশী তাওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।

(২:১২৯) হে আমাদের রব! আর আপনি তাদের মধ্য থেকে তাদের কাছে এক রাসূল পাঠান , যিনি আপনার আয়াতসমূহ তাদের কাছে তিলাওয়াত করবেন , তাদেরকে কিতাব ও হেকমত শিক্ষা দেবেন  এবং তাদেরকে পরিশুদ্ধ করবেন আপনি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।

(২:১৩০)আর যে নিজেকে নির্বোধ করেছে সে ছাড়া ইব্রাহীম এর মিল্লাত হতে আর কে বিমুখ হবে!দুনিয়াতে তাকে আমরা মনোনীত করেছি,আর আখেরাতেও তিনি অবশ্যই সৎ কর্মশীলদের অন্যতম।

(২:১৩১) স্মরণ করুন, যখন তার রব তাকে বলেছিলেন, আত্মসমর্পণ করুন, তিনি বলেছিলেন, আমি সৃষ্টিকুলের রবের কাছে আত্মসমর্পণ করলাম

(২:১৩২) আর ইবরাহীম ও ইয়াকূব তাদের পূত্রদেরকে এরই নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন,হে পুত্রগণ ! আল্লাহ্ই তোমাদের জন্য এ দীনকে মনোনীত করেছেন।কাজেই মুসলিম না হয়ে তোমরা মারা যেও না

(২:১৩৩) ইয়াকুবের যখন মৃত্যু এসেছিল তোমর কি তখন উপস্থিত ছিলে ? তিনি যখন সন্তানদের বলেছিলেন, আমার পরে তোমরা কার ইবাদাত করবে? তারা বলেছিলো,  আমরা আপনার ইলাহ ও আপনার পিতৃ পুরুষ ইবরাহীম, ইস্‌মাঈল ও ইসহাকের ইলাহ্ - সেই এক ইলাহ্রই ইবাদাত করবো। আর আমরা তাঁর কাছেই আত্মসমর্পণকারী

(২:১৩৪)তারা ছিল এমন এক জাতি,যারা অতীত হয়ে গেছে।তারা যা অর্জন করেছে তা তাদের,তোমরা যা অজন করেছো তা তোমাদের।তারা যা করত সে সম্বন্ধে তোমাদের প্রশ্ন করা হবে না

(২:১৩৫)আর তারা বলে,ইয়াহুদী বা নাসারা হও, সঠিক পথ পাবে’। বলুন,বরং একনিষ্ঠ হয়ে আমরা ইবরাহীমের মিল্লাত অনুসরণ করব এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না

(২:১৩৬)তোমরা বল, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহ্র প্রতি এবং যা আমাদের নাযিল হয়েছে, এবং যা ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তার বংশধরদের প্রতি নাযিল হয়েছে, এবং যা মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নবীগণকে তাদের রবের নিকট হতে দেয়া হয়েছে । আমরা তাদের মধ্যে কোনো তারতম্য করি না । আর আমরা তাঁরই কাছে আত্মসমর্পণকারী

(২:১৩৭) অতঃপর তোমরা যেরূপ ঈমান এনেছ তারাও যদি সেরূপ ঈমান আনে, তবে নিশ্চয় তারা হেদায়াত পাবে। আর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তারা বিরোধিতায় লিপ্ত সুতরাং তাদের বিপক্ষে আপনার জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট। আর তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ।

(২:১৩৮)আল্লাহ্র রঙ এ রঞ্জিত হও । আর রং এর দিক দিয়ে আল্লাহ্র চেয়ে কে বেশী সুন্দর? আর আমরা তাঁরই ইবাদাতকারী।

(২:১৩৯)বলুন,আল্লাহ্ সম্বন্ধে তোমরা কি আমাদের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হতে চাও?অথচ তিনি আমাদের রব এবং তোমাদেরও রব !আমাদের জন্য আমাদের আমল,আমরা তাঁরই প্রতি একনিষ্ঠ

(২:১৪০)তোমরা কি বল যে,অবশ্যই ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব ও তাঁর বংশধরগণ ইয়াহুদী বা নাসারা ছিল? বলুন তোমরা কি বেশী জান, না আল্লাহ্ ?  তার চেয়ে বেশী যালিম আর কে হতে পারে যে আল্লাহ্র কাছ থেকে তার কাছে যে সাক্ষ্য আছে তা গোপন করে ? আর তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আল্লাহ্ গাফেল নন।

(২:১৪১) তারা এমন এক উম্মাত,যারা অতীত হয়ে গেছে।তারা যা অর্জন করেছে তা তাদের।আর তোমরা যা অর্জন করেছে তা তোমাদের। তারা যা করত সে সম্পর্কে তোমাদেরকে কোন প্রশ্ন করা হবে না।

(২:১৪২) মানুষের মধ্য হতে নির্বোধরা অচিরেই বলবে যে, এ যাবত তারা যে কেবলা অনুসরণ করে আসছিল তা থেকে কিসে তাদেরকে ফিরালো ?  বলুন,পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহ্রই। তিনি যাকে ইচ্ছা সরল পথের হিদায়াত করেন

(২:১৪৩) আর এভাবে আমি তোমাদেরকে এক মধ্যপন্থী জাতিতে পরিণত করেছি, যাতে তোমরা মানবজাতির উপর স্বাক্ষী হও এবং রাসূল তোমাদের উপর সাক্ষী হতে পারেন। আর আপনি এ যাবত যে কিবলা অনুসরণ করছিলেন সেটাকে আমরা এ উদ্দেশ্যে কেবলায় পরিণত করেছিলাম যাতে প্রকাশ করে দিতে পারি কে রাসূলের অনুসরণ করে এবং কে পিছনে ফিরে যায় ? আল্লাহ্ যাদেরকে হিদায়াত করেছেন তারা ছাড়া অন্যদের উপর এটা নিশ্চিত কঠিন। আল্লাহ্ এরূপ নন যে, তোমাদের ঈমানকে ব্যর্থ করে দিবেন। নিশ্চয় আল্লাহ্ মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল, পরম দয়ালু।

(২:১৪৪)অবশ্যই আমি আকাশের দিকে আপনার বারবার তাকানো লক্ষ্য করি। সুতরাং অবশ্যই আমি আপনাকে এমন কিবলার দিকে ফিরিয়ে দিব যা আপনি পছন্দ করেন, অতএব আপনি মসজিদুল হারামের দিকে চেহারা ফিরান। আর তোমরা যেখানেই থাক না কেন তোমাদের চেহারাসমূহকে এর দিকে ফিরাও এবং নিশ্চয় যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তারা অবশ্যই জানে যে, এটা তাদের রবের পক্ষ হতে হক। আর তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ্ গাফেল নন।

(২:১৪৫) আর যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে আপনি যদি তাদের কাছে সমস্ত দলীল নিয়ে আসেন, তবু তারা আপনার কিবলার অনুসরণ করবে না। আপনিও তাদের কিবলার অনুসারী নন। তারাও পরস্পরের কিবলার অনুসারী নয়।আপনার নিকট সত্য-জ্ঞান আসার পরও যদি আপনি তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করেন,তাহলে নিশ্চয় আপনি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবেন।

(২:১৪৬) আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছি তারা তাকে সেরূপ জানে যেরূপ তারা নিজেদের সন্তানদেরকে চিনে। আর নিশ্চয় তাদের একদল জেনে-বুঝে সত্য গোপন করে থাকে।

(২:১৪৭) সত্য আপনার রবের কাছ থেকে পাঠানো। কাজেই আপনি সন্দিহানদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না

(২:১৪৮) আর প্রত্যেকের একটি দিক রয়েছে, যে দিকে সে চেহারা ফিরায়। অতএব তোমরা সৎকাজে প্রতিযোগিতা কর।  তোমরা যেখানেই থাক না কেন আল্লাহ্ তোমাদের সবাই কে নিয়ে আসবেন। নিশ্চয় আল্লাহ্ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।

(২:১৪৯)যেখান থেকেই আপনি বের হন না কেন মসজিদুল হারামের দিকে চেহারা ফিরান।নিশ্চয় এটা আপনার রবের কাছ থেকে পাঠানো সত্য।তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আল্লাহ্ গাফেল নন

(২:১৫০) আর আপনি যেখান থেকেই বের হন না কেন মসজিদুল হারামের দিকে আপনার চেহারা ফিরান এবং তোমরা যেখানেই থাক না কেন এর দিকে তোমাদের চেহারা ফিরাও,  যাতে তাদের মধ্যে যালিম ছাড়া অন্যদের তোমাদের বিরুদ্ধে বিতর্কের কিছু না থাকে। কাজেই তাদেরকে ভয় করো না এবং আমাকেই ভয় কর। আর যাতে আমি তোমাদের উপর আমার নেয়ামত পরিপূর্ণ করি এবং যাতে তোমরা হিদায়াত লাভ কর।